মানব রচিত ধর্মগুলোর মধ্যে একটি ধর্ম হচ্ছে ❝ধর্মনিরপেক্ষ❞ ধর্ম। যার একমাত্র লক্ষ্য দুনিয়াকে দ্বীনের প্রভাব মুক্ত করা তথা পার্থিব জগতের সকল বিষয়কে ধর্মীয় বিধি-নিষেধ থেকে মুক্ত রেখে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, আদর্শিক ও পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার নিজের তৈরি বিধান দেওয়া ও সকল স্তরে নেতৃত্ব প্রদান করা।
অতীতের মানব রচিত ধর্মগুলোর সঙ্গে এ ❝ধর্মনিরপেক্ষ❞ ধর্মের ব্যবধান হচ্ছে, অপরাপর ধর্মগুলো একটি ভুল পথ ধরে ইসলামের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে ইসলামের বিরোধীতার জন্য তৈরি হয়নি। এরই বিপরীত ❝ধর্মনিরপেক্ষ❞ ধর্ম, যার অস্তিত্বই হলো ইসলামের বিরোধিতার জন্য। ধর্মনিরপেক্ষতার সারকথাই হলো ইসলামবিরোধীতা।
❝ধর্মনিরপেক্ষ❞ ধর্ম ইসলামের বিরোধিতাকে কেন নিজেদের লক্ষ্য হিসেবে স্থির করল?
এই প্রশ্নের সরল জবাব হলো, ইসলামের দুটি স্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে, যে ঘোষণা অন্য কোন ধর্মের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি আর সেসকল বাতিল ধর্মগুলোর পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা আসার কোন সুযোগও নেই। একমাত্র সঠিক ধর্ম হিসেবে ইসলামই সে ঘোষণা দিতে পারে। ঘোষণা দুটি হলো—
- ১. নিশ্চয় আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে ইসলাম। —[সুরাহ আলে ইমরান, আয়াত ১৯]
- ২. যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন চায় তবে তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। —[সুরাহ আলে ইমরান, আয়াত ৮৫]
বিজ্ঞাপন এর জন্য কোন প্রকার বিনিময় গ্রহন করা হয় না
প্রথম ঘোষণার সারকথা হলো- দ্বীন-ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন তিনি গ্রহণ করবেন না। জীবনের সর্বক্ষেত্রে সকলে এ দ্বীনকে গ্রহণ করে নিতে বাধ্য। অর্থাৎ দ্বীন বা গ্রহণযোগ্য জীবন বিধান শুধুমাত্র একটিই, আর তা হচ্ছে ইসলাম। এ কথার অর্থ হলো দ্বীন বা ধর্মের শিরোনামে পৃথিবীতে ইসলাম ব্যতীত যা কিছু চলছে সেগুলো ধোঁকাবাজি ও প্রতারণা। আর তার অনুসারীরা হয়তো ধোঁকাবাজ নয়তো ধোঁকাখোর, হয়তো প্রতারক নয়তো প্রতারিত।
আর দ্বিতীয় ঘোষণার সারকথা হল, ইসলাম ছাড়া সকল ধর্ম ও মতবাদ আল্লাহ তাআলার কাছে অগ্রহণযোগ্য। সুতরাং প্রতিটি ব্যক্তিকে ধর্ম হিসেবে একমাত্র ইসলামকে মেনে চলার সাথে সাথে অন্যান্য সকল ধর্ম অস্বীকার করতে হবে, তাহলেই আল্লাহর কাছে একজন প্রকৃত আত্মসমর্পণকারী মুসলিম হওয়া সম্ভব এবং এতেই তার ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি নিহিত। আর ইসলাম ব্যতীত ভিন্ন ধর্মের শিরোনামে যে যা-ই গ্রহণ করবে তা তার জন্য কোন ভালো ফলাফল বয়ে আনবেনা। বরং সে চিরস্থায়ী জাহান্নামি হবে।
এমতাবস্থায় বাস্তবিকভাবে দ্বীন বা ধর্মের পক্ষে কথা বলবে কেবলই মুসলিম। Situation যেমনই হোক, ইসলামের কোন মূলনীতিতে পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই। পক্ষান্তরে অপরাপর ধর্ম তাদের ধর্মগুরুদের হাতের খেলনা; তারা যেভাবে চায়, যে ক্ষেত্রে চায়, যে বিষয়ে চায়— পরিবর্তন-পরিবর্ধন ও সংযোজন-বিয়োজন করার ক্ষমতা তাদের রয়েছে। অন্ততপক্ষে তারা এমনটা মনে করে।