মানসিক দুশ্চিন্তা বা ডিপ্রেশনের সময় অনেকেই গান শুনে, মুভি দেখে কষ্ট ভুলবার চেষ্টা করে। আসলেই কি এভাবে দুঃখ, কষ্ট নিবারণ হয়? মোটেই না। বরং সাময়িক ফ্যান্টাসিতে ভোগা যায়। অথচ কুরআন মাজদ-এ এমন কিছু আয়াত রয়েছে, যা সত্যিই একজন মানুষের সব দুঃখ-কষ্ট ভুলিয়ে দিতে পারে।
→ আল্লাহ তাআলা মানুষকে কষ্টের পরে সুখ দিয়ে থাকেন। তিঁনি বলেন,
سَيَجْعَلُ اللَّهُ بَعْدَ عُسْرٍ يُسْرًا
‘আল্লাহ কষ্টের পর সুখ দিবেন।’ —[সূরা আত-তালাক : ৭]
→ আর এটাও আমাদের জন্য রাখা দরকার যে, কষ্টের সাথেই রয়েছে স্বস্তি। আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا
‘নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে রয়েছে স্বস্তি।’ —[সূরা আল-ইনশিরাহ : ৬]
→ আমাদের দুঃখ কষ্ট সবকিছু কেবল আল্লাহ তাআলার কাছে নিবেদন করা উচিত। যেমন ইয়াকুব আলাইহিস সালাম তার দুঃখ কষ্ট সব কেবল আল্লাহ তাআলার কাছে নিবেদন করছিলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّمَا أَشْكُو بَثِّي وَحُزْنِي إِلَى اللَّهِ
‘(ইয়াকুব আলাইহিস সালাম বলছেন,) আমি তো আমার দুঃখ ও অস্থিরতাগুলো আল্লাহর সমীপেই নিবেদন করছি।’ —[সূরা ইউসুফ : ৮৬]
→ আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহ তাআলার সাহায্য আমাদের অতি নিকটেই। যেমনটা আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
أَلَا إِنَّ نَصْرَ اللَّهِ قَرِيبٌ
‘জেনে রেখো, আল্লাহর সাহায্য নিকটে।’ —[সুরা বাকারা : ২১৪]
→ মুমিনদের কখনো আল্লাহ তাআলার রহমত থেকে নিরাশ হওয়া উচিত নয়। কারণ কাফেরসম্প্রদায় কেবল আল্লাহ তাআলার রহমত থেকে নিরাশ হতে পারে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَا تَيْأَسُوا مِن رَّوْحِ اللَّهِ ۖ إِنَّهُ لَا يَيْأَسُ مِن رَّوْحِ اللَّهِ إِلَّا الْقَوْمُ الْكَافِرُونَ
‘আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না।’ —[সুরা ইউসুফ : ৮৭]
→ সাথে সাথে এটাও ভুলে গেলে চলবে না যে, আল্লাহ তাআলা কারোর উপরে সাধ্যাতীত কোন কিছু চাপিয়ে দেন না। তিঁনি বলেন,
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا
‘আল্লাহ কোনো ব্যক্তির উপর তার সাধ্যের চাইতে বেশি বোঝা চাপিয়ে দেন না।’ —[সূরা বাকারা : ২৮৬]
→ দুঃখ-কষ্ট দুর্দশার ও বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে পরীক্ষা করে থাকেন। আল্লাহর সে পরীক্ষায় সফল হতে হলে আমাদেরকে ধৈর্যের সাথে অটল থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ۗ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ
‘এবং অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের।’ —[সূরা বাক্বারা : ১৫৫]
→ বিপদ আপদে সবর এবং সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। তিনি একমাত্র সাহায্যকারী।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা সবর ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ —[সুরা বাকারা : ১৫৩]
→ মুমিনের দুআ কখনো ব্যর্থ হয় না। অবশ্যই আল্লাহ তাআলা তার দুআ কবুল করেন; যদি না সেটা আল্লাহ তাআলার নাফরমানির ব্যাপারে দুআ হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَمْ أَكُن بِدُعَائِكَ رَبِّ شَقِيًّا
‘(যাকারিয়া আলাইহিস সালাম বলেন,) হে আল্লাহ, আমি তো কখনো তোমাকে ডেকে ব্যর্থ হইনি।’ —[সুরা মারইয়াম : ৪]
